পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কয়েকজন উপাচার্য এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার আগে নেয়া টেস্ট পরীক্ষার ফলাফলের উপর মূল্যায়ন করে ভর্তি করার প্রস্তাব দিয়েছেন। কেউ আবার এইচএসসি-সমমানের ফলাফলের উপর ভিত্তি কের ভর্তি করতে প্রস্তাব করেছেন।
শনিবার উপাচার্য পরিষদের সভায় ভর্তির ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে একমত হন ভিসিরা। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের প্রায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, কিভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া যায় সে বিষয়ে সকলের কাছে মতামত চাওয়া হয়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে প্রায় সকলে আপত্তি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সরাসরি পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব না হলেও কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। আগামী শনিবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।
সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক রফিকুল্লাহ খান ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের আগে টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়ন করে ভর্তি করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
বৈঠকে তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে। আবার শিক্ষার্থীদের ভর্তি না করালেও নতুন সংকট তৈরি হবে। যেহেতু এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল করে জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ করা হবে, তাই এ ফলের উপর মূল্যায়ন করলে প্রশ্ন উঠতে পারে। এইচএসসি পরীক্ষার আগে ফরম পূরণের সময় টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তাব জানান তিনি। তার এ প্রস্তাবে কোন কোন উপাচার্যরা একমত হন।
ভর্তি পরীক্ষা যেন কোনক্রমেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে ব্যাপারে ইউজিসির পক্ষ থেকে উপাচার্যদের আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এখনই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা মোটেও সমীচীন হবে না।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মতে, হল খোলা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার উদাহরণ তুলে ধরেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, সমগ্র জাতি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা চাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দরকার।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরসহ ৪৬ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ উপস্থিত ছিলেন।