পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক প্রভাব
আব্দুল হাই মণ্ডল, সাবেক জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো, বিআইডিএস:
দক্ষিণাঞ্চলে পদ্মা সেতুর প্রভাব অপরিসীম। সবচেয়ে বড় কথা হলো সড়কপথ ও রেলপথে যোগাযোগের সময় চার ঘণ্টা কমে যাবে। এতে মানুষের যাতায়াত সহজ হবে। নতুন ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠবে।
সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার আগে প্রাক্–সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে আমরা অনুমান করেছিলাম, এই সেতু হলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে এখনকার বাস্তবতা সেই অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি। অর্থাৎ অর্থনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির হার এর চেয়েও বেশি হবে। সেতু হলে স্বাভাবিকভাবে নদীর পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে অর্থনীতি চাঙা হবে, সম্প্রসারিত হবে বাজার। এত দিন সেখানে কৃষিপণ্যের বাজার ছোট ছিল, এখন সেই বাজার বড় হবে। কৃষকেরা ঢাকায় ফসল পাঠাতে পারবেন। ধারণা করা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আয় দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
এই সেতুর কারণে মোংলা বন্দর গতি পাবে বলে আশা করা যায়। এত দিন এই বন্দর তেমন একটা ব্যবহৃত হতো না। এখন যোগাযোগ গতি পেলে এই বন্দরের ব্যবহার বাড়বে। পাশাপাশি পায়রা বন্দর নির্মিত হচ্ছে। সেতুর মাধ্যমে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে এই দুই বন্দরের যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
যোগাযোগ উন্নত হলে স্বাভাবিকভাবে দক্ষিণাঞ্চলে নতুন শিল্পায়ন হবে। অনেক মানুষ কাজ পাবে। বেকারত্ব কমবে, কমবে মানুষের ঢাকায় আসার প্রবণতা।
একই সঙ্গে শিক্ষার বিস্তার সম্ভব হবে। যেসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না বা কম, সেখানে বিদ্যালয় করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সময় ও অর্থের কারণে যাঁরা এত দিন ঢাকাসহ বড় শহরে পড়াশোনা করতে আসতে পারতেন না, তাঁরা এখন আসতে পারবেন। জীবনে গতি আসবে।