সেলিম রায়হান, অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়:
পদ্মা সেতুতে শেষ স্প্যান সংযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন শুরু হলো। অনেক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে এই সেতু। সেতুর কাজ শুরু হওয়ার আগে এক গবেষণায় বলেছিলাম, এই সেতু বাস্তবায়িত হলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। তবে তখন সেতুতে রেল সংযোগের পরিকল্পনা ছিল না। এখন তো রেললাইনও আছে। তাই প্রবৃদ্ধির সেই প্রাক্কলন এখন আরও বেড়ে যাবে।
তবে মনে রাখতে হবে, সেতু হওয়ার মধ্য দিয়ে সব আপনাআপনি হয়ে যাবে—এমনটা ভাবার অবকাশ নেই। যমুনা সেতু হওয়ার পর কিন্তু উত্তরবঙ্গে সেভাবে শিল্পায়ন হয়নি। গ্যাস–সংযোগসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আনুষঙ্গিক পরিকল্পনার ঘাটতি ছিল সেখানে। সেটা থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের এগোতে হবে। তবে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে আগে থেকেই ঢাকার যোগাযোগ ভালো। তা সত্ত্বেও দক্ষিণবঙ্গের উন্নয়নের জন্য সামগ্রিক পরিকল্পনা দরকার।
এই সেতুর মধ্য দিয়ে দুটি সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এই বন্দরগুলোর ভৌগোলিক অবস্থানও সুবিধাজনক। ভুটান, নেপাল ও ভারতের কিছু অঞ্চল এই বন্দর দুটি ব্যবহার করতে পারে। পাশাপাশি এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা গেলে প্রতিবেশী এই দেশগুলোতে আমরা রপ্তানিও করতে পারব। ফলে এই সেতু এবং মোংলা ও পায়রা বন্দরের আঞ্চলিক গুরুত্বও আছে। সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
শিল্পায়ন করতে জমির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা জরুরি। এর সঙ্গে দরকার গ্যাস ও বিদ্যুৎ। এসব নিশ্চিত করা গেলেও দুর্যোগপ্রবণ দক্ষিণাঞ্চলে আবহাওয়াজনিত কারণেও শিল্পায়ন করা কঠিন। ফলে স্থাপনা রক্ষার অবকাঠামো না থাকলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন না।