আমরা অবশ্য এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। চাঁদ ঘুরছে পৃথিবীর চারদিকে, এটাই শুধু আমরা জানি, দেখি ও বলি। পূর্ণিমা-অমাবস্যা, জোয়ার-ভাটা এসবই চাঁদের ব্যাপারে আমাদের মূল বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু পৃথিবী যে বছরে একবার সূর্যের চারদিক ঘুরে আসছে আর সেই সঙ্গে চাঁদও সূর্য প্রদক্ষিণ করছে, সেটা আমরা সাধারণত মনে রাখি না।
তাই এককথায় বলা যায়, চাঁদও সূর্য প্রদক্ষিণ করছে। তবে একটু বৈশিষ্ট্যপূর্ণভাবে। পৃথিবী যেমন মসৃণ গতিতে ঘুরছে, ঠিক সেইভাবে নয়। চাঁদের সূর্য প্রদক্ষিণ একেবারে নিস্তরঙ্গ নয়। মোটামুটি মাসে একবার চাঁদ পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে। কিন্তু তার কক্ষ-প্রদক্ষিণ গতি কম। পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় ৩০ গুণ দূর থেকে সে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে। এ কারণে পৃথিবীর পরিপ্রেক্ষিতে চাঁদের কক্ষপথ পরিভ্রমণের গতিবেগ (অরবিটাল ভেলোসিটি) কম। সেকেন্ডে মাত্র ১ কিলোমিটার।
অন্যদিকে পৃথিবী-চাঁদ ব্যবস্থাটি সূর্যের চারদিকে ঘুরছে সেকেন্ডে ৩০ কিলোমিটার। সেই তুলনায় চাঁদের পৃথিবী প্রদক্ষিণ বেগ কিছুই না। ফলে পৃথিবী-চাঁদের একত্রে সূর্য প্রদক্ষিণের সময় চাঁদের চলার পথ অনেকটা ঢেউয়ের মতো ওঠা-নামা করতে দেখা যায়। কিন্তু চাঁদের পৃথিবী-প্রদক্ষিণ কক্ষপথের ব্যাস, পৃথিবী-চাঁদ ব্যবস্থার সূর্য-প্রদক্ষিণ কক্ষপথের ব্যাসের ১ শতাংশের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভগ্নাংশেরও কম।
এ কারণে প্রকৃতপক্ষে সূর্য প্রদক্ষিণের সময় চাঁদের ঢেউ খেলানো ওঠা-নামা প্রায় চোখেই পড়ে না। তাই বলা যায়, পৃথিবীর চারদিকে তো ঘুরছেই, সেই সঙ্গে চাঁদ সূর্যের চারপাশেও ঘুরছে।