সুচ ফোটানো টিকা নয়; বরং নাক দিয়ে টেনে নিলেই সেটা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেবে। এমন একটি টিকা আবিস্কারের চেষ্টা করছেন সুইডেনের বিজ্ঞানীরা।
পাউডারের মতো নাক দিয়ে নেওয়া সেই টিকা সুইডেনে এরই মধ্যে প্রাণীর দেহে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং সেখানে শতভাগ সফলতা পাওয়া গেছে বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন। এখন বিজ্ঞানীরা মানব ট্রায়াল করতে চান বাংলাদেশে। খবর বিবিসির।
এই গবেষণাকে যুগান্তকারী বলে বর্ণনা করছেন মুগদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এবং মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির। তিনি বলেন, প্রচলিত টিকা সংরক্ষণে অনেক ব্যবস্থা নিতে হয়। সেটা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রে যেতে হয়। কিন্তু এ গবেষণাটি সফল প্রমাণিত হলে সেটা শুধু করোনাভাইরাসের জন্য নয়, অন্যসব টিকা নেওয়ার ব্যাপারটিও অনেক সহজ করে দেবে।
প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশি চিকিৎসকের উদ্যোগে মানব ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সেজন্য এ মাসেই প্রস্তাবটি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) জমা দেওয়া হবে। সুইডেনের ক্যারোলিস্কা ইউনিভার্সিটি এই টিকা আবিস্কার করেছে। বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশ নাক দিয়ে নেওয়ার উপযোগী টিকা আবিস্কারের চেষ্টা করছে।
সুইডেনের ইমিউন সিস্টেম রেগুলেশন হোল্ডিং এবি বা আইএসআর মানব ট্রায়ালের জন্য কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিআরও) হিসেবে বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে। সিআরও হিসেবে কাজ করবেন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ এবং অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।
অধ্যাপক কবির বলেন, এটি একেবারে অভিনব একটি আবিস্কার হবে। এটা টিকার ব্যাপারে ব্যাপক পরিবর্তন এনে দেবে। এই টিকা ফ্রিজে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখার দরকার হবে না। বাসার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা যাবে। তিনি বলেন, তারা রিসার্চ প্রটোকল তৈরি করছেন। এই মাসের শেষের দিকে সেটা বিএমআরসিতে এথিক্যাল পারমিশনের জন্য জমা দেওয়া হবে। অনুমতি পাওয়া গেলে আশা করা যায় আগামী মাসেই ট্রায়াল শুরু করা যাবে। তবে এটা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশে প্রথম দফা পরীক্ষায় ১৮০ জন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যারা সবাই স্বাস্থ্যকর্মী। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই পরীক্ষা হতে পারে। অধ্যাপক কবির বলেন, বাংলাদেশে ট্রায়াল হলে আমরা এই টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকায় থাকব। আমরা সেটা উৎপাদনের অনুমতি পাবো। ফলে এটা আমাদের জন্য একটি বিরাট সুযোগ হবে। গত ৬ জুলাই এই টিকা উৎপাদনের ব্যাপারে বাংলাদেশি কোম্পানি ইউনিমেডের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে আইএসআর।