তীব্র রোদ ও গরমে এবার চৈত্রের মাঝামাঝি থেকেই হাঁসফাঁস অবস্থা। প্রতিদিন যাঁদের স্কুল-কলেজ বা অফিসের কাজে বাইরে যেতে হয়, তাঁদের ঘাম ও ঘামের দুর্গন্ধের সমস্যায় ভুগতে হয়।
রোদে বাইরে গেলে শরীর ঘামবেই। মানুষের শরীর থেকে বের হওয়া ঘামের নিজস্ব কোনো গন্ধ নেই। ত্বকের ওপর লেগে থাকা ঘামে একধরনের ব্যাকটেরিয়ার উৎপত্তির কারণেই এই দুর্গন্ধ হয়। কখনো কখনো এটি অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। শুধু দুর্গন্ধ নয়, শরীরে ঘাম জমে ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণও দেখা দিতে পারে।
যেভাবে ঘাম হয়
শরীরের দুটি গ্রন্থি অ্যাকরিন ও অ্যাপোক্রিন থেকেই মূলত ঘামের উৎপত্তি। শরীরচর্চা বা পরিশ্রমের ফলে উৎপন্ন ঘামের জন্য দায়ী অ্যাকরিন গ্রন্থি। এই ঘামে দুর্গন্ধ নেই। এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখে। দুর্গন্ধযুক্ত ঘামের জন্য দায়ী বগল ও যৌনাঙ্গে থাকা অবাঞ্ছিত লোম ও অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি।
উষ্ণ আবহাওয়ায় কিছুক্ষণ থাকলে বা কোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীর থেকে ঘাম নির্গত হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের নির্দিষ্ট কিছু স্থান যেমন হাত ও পায়ের তালু, বগলের নিচ থেকে অতিরিক্ত ঘাম হলে সেটিকে হাইপারহাইড্রোসিস বলা হয়। মোট জনসংখ্যার প্রায় এক শতাংশ মানুষের এই সমস্যা হতে পারে।
যেসব কারণে অতিরিক্ত ঘাম ও দুর্গন্ধ হয়
- খাবারে সালফারের পরিমাণ বেশি থাকলে
- মাংস, ডিম, পেঁয়াজ, ব্রকলি, রসুন বেশি খেলে
- অতিরিক্ত লবণ ও মসলাযুক্ত খাবারে
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়
- মদ্যপান করলে
- মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন থাকলে
- হরমোনের প্রভাবে কৈশোরে গায়ে দুর্গন্ধ বাড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে যা করবেন
- গরমে আঁটসাঁট ও সিনথেটিক পোশাক এড়িয়ে সুতির পাতলা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
- প্রতিদিন গোসল করুন। নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
- অন্তর্বাস ও মোজা পরিষ্কার রাখুন।
- প্রচণ্ড রোদ ও গরম এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করুন।
- ঘামাচি হলে চুলকানি রোধে অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ খান।
- ঘেমে গেলে পোশাক পরিবর্তন করুন।
- মসলাযুক্ত খাবার, কফি, অ্যালকোহল পরিহার করুন।
- দুর্গন্ধ এড়াতে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করুন। তবে, ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ত্বক পরিষ্কার করে নেবেন।
- দুর্গন্ধের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া রোধে নিমপাতা দিয়ে সেদ্ধ পানিতে গোসল করতে পারেন।