কুমিল্লা অফিস:
কুমিল্লা (উত্তর) জেলা যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা হয়েছে তেরো মাস আগে। এর পর থেকে এ পর্যন্ত আর কমিটি নেই। বারবার উদ্যোগ নিলেও অজ্ঞাত কারনে বিলম্বিত হচ্ছে কমিটি ঘোষণা। এতে করে সাংগঠনিক কর্মকান্ডেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, কুমিল্লা (উত্তর) জেলা যুবলীগের কমিটিতে দক্ষ, ত্যাগী এবং পরিশ্রমী নেতাদের পদবঞ্চিতের ষড়যন্ত্র করে আসছে দলটির কতেক সুবিধাবাদী নেতা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে তারা নানান মিথ্যা তথ্যে উপরমহলের কানভারী এবং তদবীর অব্যাহত রেখেছেন। অপরদিকে, মাদকব্যবসায়ী, নিস্ক্রীয় সাবেক ছাত্রলীগনেতা, ব্যবসায়ি ও প্রাইভেট চাকুরীজীবিদের অর্থের বিনিময়ে দলে ঠাঁই দিতে দৌঁড়ঝাঁপ করছেন উত্তরের বেশ ক’জন রাজনীতিক এবং জনপ্রতিনিধি। এতে করে পদ হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন দলের নিবেদিত নেতারা।
জানা গেছে, গত বছরের ২ অক্টোবর কুমিল্লা (উত্তর) জেলা যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে যুবলীগের নতুন কমিটিতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কিংবা আহবায়ক, যুগ্ম-আহবায়ক, পদে স্থান পেতে জোর লবিং করছে আগ্রহীরা। সভাপতি পদে বেশ আলোচনায় রয়েছেন যুবলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সারওয়ার হোসেন বাবু। এছাড়া, একই পদে দাউদকান্দি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রকৌশলী গাজী রাসেলের নাম আলোচনায় রয়েছে। তবে, এই পদে সারওয়ার হোসেন বাবু বেশ আলোচিত। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, সারওয়ার হোসেন বাবু জেলাজুড়ে বিগত ১৫ বছরে নানান ইতিবাচক কর্মকান্ডে সক্রিয় ছিলেন। বিশেষ করে করোনাকালে তার সক্রিয় কর্মকান্ড ছিল প্রশংসনীয়। আরেক প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বর্তমানে দাউদকান্দি উপজেলা যুবলীগের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়া, প্রকৌশলী গাজী রাসেলের বাড়ি দেবিদ্বার উপজেলায়। তিনি ঢাকায় থাকেন বেশিরভাগ সময়। এলাকায় খুবই কম বিচরণ তার। এমন পরিস্থিতিতে সারওয়ার হোসেন বাবুর সাথে এই লড়াইয়ে তেমন কেউ প্রতিদ্বন্ধিতায় আসতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা।
জানা গেছে, সাংগাঠনিক কার্যক্রমেও সারওয়ার হোসেন বাবু বেশ সক্রিয়। বিশেষ করে করোনা মহামারিতে ‘হ্যালো যুবলীগ’ ব্যানারে প্রায় দশ হাজার অসহায় ও কর্মহীন মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এছাড়া, করোনা সুরক্ষাসামগ্রী ও জরুরী অক্সিজেন সেবা দিয়েছেন মানুষকে। করোনাকালীন সংকটময় সময়ে মানুষের পাশেই ছিলেন তিনি। কুমিল্লা (উত্তর) জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী সম্বলিত বই বিতরণ করেছেন। সম্প্রতি সিলেটে বণ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে দুই ট্রাক খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। তাছাড়া, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সকল কর্মকান্ডে তার সক্রিয়তা উল্লেখ করার মত।
সারওয়ার হোসেন বাবু জানান, ‘যদি দায়িত্ব পাই তাহলে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালনে কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতৃত্বে এবং নির্দেশে সংগঠনের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করব’।
দলটির একাকি সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন কমিটির বিভিন্ন পদে আলোচনায় রয়েছেন দেবিদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক শামীম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য আবুল কালাম আজাদ, এড. এনামুল হাছান খান রিপন, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু কাউছার অনিক, হোমনা কলেজের সাবেক ভিপি লিটন, বাঙ্গরা থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ নজরুল, দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ভাই মামুনুর রশীদ প্রমুখ।
কুমিল্লা (উত্তর) জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু কাউছার অনিক বলেন, ‘সাবেক ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে যুবলীগ গঠন করলে সাংগাঠনিক কার্যক্রম বেগবান হবে। আশা করি সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করা নেতাকর্মীরাই যুবলীগে স্থান পাবে’।
উল্লেখ, ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বাহাউদ্দিন বাহারকে আহবায়ক ও সারওয়ার হোসেন বাবুকে যুগ্ম- আহবায়ক করে কুমিল্লা (উত্তর) জেলা যুবলীগের ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র।