সমালোচনা ও শঙ্কা নিয়েই শুরু হয়েছিল কাতার বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ শুরুর আগে অনেকেই এই আয়োজন বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। তবে সব শঙ্কা পেছনে ফেলে দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বকাপ।
চমকে ঠাসা গ্রুপ পর্বের পর শেষ ষোলোও হয়েছে জমজমাট। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর কাছে তো এবারের গ্রুপ পর্ব সর্বকালের সেরা। বলেছেন, দিন শেষে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই তাঁদের উদ্দেশ্য।
বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে খেলা চলাকালে টিভিতে প্রায়ই দেখা গেছে জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর মুখ। একাকী বসে তিনি খেলা উপভোগ করছেন, এটা ছিল নিয়মিত দৃশ্য।
বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে ইনফান্তিনো বলেছেন, ‘আমি এই বিশ্বকাপের সব কটি ম্যাচ দেখেছি। খুব সহজে ও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, এটি বিশ্বকাপের সর্বকালের সেরা গ্রুপ পর্ব ছিল। যার ফলে ফিফা বিশ্বকাপের বাকি অংশকেও খুব আশাব্যঞ্জক দেখাচ্ছে।
কাতারে উপস্থিত দর্শকদের প্রশংসা করতে গিয়ে ফিফা সভাপতি আরও বলেন, ‘এটা অবশ্য আমরা ইতিমধ্যেই জানি যে নান্দনিক স্টেডিয়ামে দারুণ সব খেলা হয়েছে। পাশাপাশি যেসব মানুষ এখানে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরাও দুর্দান্ত ছিলেন। এখানে গড়ে ৫১ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন।’
শুধু স্টেডিয়াম কিংবা দোহার রাস্তাতেই নয়, টেলিভিশনেও ফুটবল উপভোগ করা দর্শকসংখ্যাও নতুন রেকর্ড গড়েছে বলে জানিয়েছেন ফিফা সভাপতি, ‘টেলিভিশনে সংখ্যাটা রেকর্ড ভেঙেছে। আমরা ইতিমধ্যে ২০০ কোটির বেশি দর্শক পেয়েছি, যা সত্যিই অবিশ্বাস্য! ২৫ লাখ মানুষ দোহার রাস্তায় দাঁড়িয়ে এবং লাখো মানুষ প্রতিদিন স্টেডিয়ামে এসে খেলা দেখেছেন। তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে উল্লাস করেছেন এবং নিজেদের দলকে সমর্থন দিয়েছেন।’
এবারের বিশ্বকাপে শুরু থেকেই দেখা গেছে একের পর এক চমক। সৌদি আরব, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তিউনিসিয়া ও মরক্কোও দেখিয়েছে ফুটবলের মঞ্চে এখন আর তাদের ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। মরক্কো তো সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে হারিয়ে শেষ আটে পৌঁছে গেছে।
দারুণ এসব চমক নিয়ে ইনফান্তিনো বলেন, ‘এখন আর বড় দল ও ছোট দল বলে কিছু নেই। সবার মান ছিল কাছাকাছি। প্রথমবারের মতো সব মহাদেশের জাতীয় দল নকআউট পর্বে গেল। এটা দেখায় যে ফুটবল এখন সত্যিই বৈশ্বিক একটি খেলা।’
এত সব অর্জন ও মাইলফলক শুধুই মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য উল্লেখ করে ইনফান্তিনো বলেন, ‘আমরা আশা করি, ফিফা বিশ্বকাপ যেভাবে শুরু হয়েছে, সেভাবেই এগিয়ে যাবে। আমি নিশ্চিত যে আমরা বিশ্বব্যাপী ৫০০ কোটি দর্শকের মাইলফলক ছুঁতে পারব। আর স্টেডিয়ামের কথা বললে আক্ষরিক অর্থেই সব ম্যাচের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। আর সবশেষে আমরা চাই বিশ্বব্যাপী মানুষদের একটু আনন্দ দিতে এবং তাদের মুখে হাসি ফোটাতে। এ জন্যই ফুটবল। এ জন্যই ফুটবল বিশ্বকাপ।’