আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল বৃক্ক বা কিডনি। শরীরের সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখতে কিডনির যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আমাদের শরীরের রক্ত পরিশোধনকারী অঙ্গ হল কিডনি। শরীরে জমে থাকা নানা রকম বর্জ্য পদার্থ পরিশোধিত হয় কিডনির মাধ্যমে। কিডনির নানা সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কিডনিতে পাথর হওয়া। আমাদের দেশে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সংখ্যাটা দিন দিন বেড়েই চলছে! বিশেষ করে কিডনি স্টোন বা বৃক্কে পাথর জমার সমস্যার কথা এখন প্রায়শই শোনা যায়।
কিডনির সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হল স্টোন বা পাথর হওয়ার সমস্যা। কিডনি স্টোনের প্রাথমিক লক্ষণগুলি নির্ভর করে পাথর কিডনির কোথায় এবং কী ভাবে রয়েছে তার উপর। তাছাড়া, কিডনিতে হওয়া পাথরের আকার-আকৃতিও এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিচার্য বিষয়। আসুন এ বার কিডনিতে পাথর জমার বা হওয়ার কারণগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ:
- রক্তবর্ণের প্রসাব।
- গা বমি বমি ভাব বা বমিও হতে পারে।
- কোমরের পিছন দিকে তীব্র ব্যথা হওয়া। তবে এই ব্যথা সাধারণত খুব বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয় না। এই সমস্যা মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছালে ব্যথা কিডনির অবস্থান থেকে তলপেটেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কিডনিতে পাথর জমার কারণ:
কিডনিতে পাথর জমার বা তৈরি হওয়ার প্রকৃত কারণ এখনও সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে কিছু কিছু বিষয়কে কিডনিতে পাথর তৈরির কারণ মনে করেন চিকিৎসকরা। যেমন:
- শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব বা কম পানি খাওয়া।
- বার বার কিডনিতে সংক্রমণ হওয়া। সংক্রমণ হলে তার জন্য যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা।
- মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে পনির, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস।
- শরীরে ক্যালসিয়ামের আধিক্য ইত্যাদি।
সতর্কতা:
- কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি এড়াতে চাইলে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে।
- কখনও দীর্ঘ ক্ষণ প্রসাব চেপে রাখবেন না! প্রসাবের বেগ আসলে চেষ্টা করবেন সঙ্গে সঙ্গে প্রসাব করার।
- প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হবে।
- অতিরিক্ত মাত্রায় দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়াই ভাল।
- বার বার ইউরিন ইনফেকশন বা কিডনিতে সংক্রমণ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং যথাযথ চিকিৎসা শুরু করুন।
সহকারি অধ্যাপক ডা: ফারহানা ইয়াসমিন
এমবিবিএস, এমডি
নবজাতক, শিশুরোগ, শিশুপুষ্টি, পরিপাকতন্ত্র ও লিভার বিশেষজ্ঞ
farhanayasminsb@gmail.com