মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে বিতর্কিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের দিন ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের যাঁরা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তাঁদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গেছেন, তাঁরা আসলে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বিতর্কিত করেছেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে এভাবে বিতর্কিত করা তাঁদের সমীচীন হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কেব্ল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর সাংবাদিকদের এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
হাছান বলেন, ‘তিনি (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) সেখানে গেছেন, সেটি শুনে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান বিনা বিচারে এবং ক্যাঙ্গারু কোর্টের মাধ্যমে বিচার ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধাসহ যাদের ফাঁসি দিয়েছিল, তাদের সন্তান-পরিজনদের সংগঠন “মায়ের কান্না”র জনা পঞ্চাশেক মানুষ মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য সমবেত হয়েছিল। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা স্মারকলিপি দেওয়ার সুযোগ করে দেননি এবং সমবেতরা কথাও বলতে পারেনি। আমি মনে করি, মার্কিন রাষ্ট্রদূত যদি তাদের স্মারকলিপি নিতেন এবং তাদের দুটি কথা শুনতেন, তাহলে তারা সেখানে যাওয়া নিয়ে আজকে যে প্রচণ্ড সমালোচনা হচ্ছে, সেটি হতো না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত, সেদিন ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এ দিবসে নানা অনুষ্ঠান থাকে, দেশের সাধারণ মানুষ এবং বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সবাই শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। অনেক সময় বিদেশি রাষ্ট্রদূতেরাও সেখানে গিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। সেই দিনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গেলে অনেক ভালো হতো এবং স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে বাঙালি জাতির যে কষ্ট, ত্যাগ, বুদ্ধিজীবীদের আত্মদান, সেটির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হতো।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের দিনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে “মায়ের ডাক” নামে সংগঠনের কো-অর্ডিনেটরের বাসায় যাওয়ার পরামর্শ কে দিয়েছে আমি জানি না, তবে যারাই পরামর্শ দিয়েছে, তারা সঠিক পরামর্শ দেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘তার (মার্কিন রাষ্ট্রদূতের) নিজেরও দিবসটার দিকে লক্ষ রাখা দরকার ছিল। তা ছাড়া তিনি যে সেখানে যাবেন, সেটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানে না, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেটিই বলেছেন। আর তিনি যাদের কাছে গেছেন তারা, অর্থাৎ “মায়ের ডাক” হচ্ছে সেই সংগঠন, যারা গুমের অভিযোগ করছে। কিন্তু যারা গুম হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাদের অনেককেই আবার খুঁজে পাওয়া গেছে, অনেকেই খুনের ও মাদক চোরাচালানের মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত-সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি, যাদেরকে বিএনপি গুম হয়েছে বলে বেড়াচ্ছে।’
এর আগে কোয়াবের নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। কোয়াবের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নবনির্বাচিত সভাপতি এ বি এম সাইফুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোশাররফ আলী বক্তব্য দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি রাশেদুল রহমান, আল আমিন; সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল মামুন; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান; অর্থ সম্পাদক সেলিম সারওয়ার প্রমুখ।