শামসুল আলম, জ্যেষ্ঠ সচিব, পরিকল্পনা কমিশন:
পদ্মা সেতু আমাদের চিন্তার জগতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। আমরা যে নিজের টাকায় এত বড় প্রকল্প করতে পারি, তা পদ্মা সেতু করে বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছি। এতে করে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ সম্পর্কে উচ্চ ধারণা তৈরি হবে। একই সঙ্গে আমাদের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। সামনের দিনগুলোতে পদ্মা সেতুর চেয়েও বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সাহস তৈরি হবে। পদ্মা সেতুতে শেষ স্প্যান বসানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ মূলত মহাপ্রকল্পের যুগে প্রবেশ করেছে।
বাংলাদেশ জাতিসংঘ ঘোষিত ১৫ বছর মেয়াদি এসডিজি বাস্তবায়ন করছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ আয়ের দেশে যাওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে আমাদের সেই লক্ষ্য ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন আরও সহজ হবে। পদ্মা সেতুর কারণে শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার তিন কোটি মানুষই উপকৃত হবে তা নয়, সারা দেশের মানুষই হবে।
বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার পর উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে দারিদ্র্যের হার অনেক কমে গেছে। কৃষির বহুমুখীকরণ হয়েছে। শিল্পায়নেও পরিবর্তন এসেছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর চেয়ে পদ্মা সেতু দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। কারণ, দক্ষিণাঞ্চলের পটুয়াখালীর পায়রাতে একটি সমুদ্রবন্দর হচ্ছে। আর মোংলা বন্দর তো রয়েছেই। পদ্মার ওপারে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হওয়ার কথা রয়েছে।
এসব প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়ে গেলে সারা দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন করে গতি সঞ্চারিত হবে। পদ্মা সেতুর কারণে নগরেরও বিস্তৃতি ঘটবে। গ্রাম ও শহরের মধ্যে একটা সেতুবন্ধ তৈরি হবে। দক্ষিণাঞ্চলে নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। পরিবহন ব্যবস্থায়ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। প্রতিবছর মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে বাড়তি ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে দেড় শতাংশ বাড়তি প্রবৃদ্ধি যুক্ত হবে পদ্মা সেতুর কারণে।